• জীবন ও সম্পর্কের দ্বন্দ্ব:তখন কুয়াশা উপন্যাসের প্রধান থিম হচ্ছে জীবন এবং সম্পর্কের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব। চরিত্রগুলি তাদের ব্যক্তিগত জীবনের মানসিক চাপ, সম্পর্কের জটিলতা, এবং নিজেদের মধ্যে আস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিযুক্ত থাকে।

• ভালোবাসা এবং আত্মপরিচয়ের সন্ধান: উপন্যাসটি প্রেম, ভালোবাসা, এবং আত্মপরিচয়ের খোঁজে থাকা চরিত্রদের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা তুলে ধরে। চরিত্রগুলি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করে, কিন্তু নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংকট তাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

• মানসিক অস্থিরতা ও সামাজিক কাঠামো: চরিত্রগুলো জীবনের ভেতর অস্থিরতা অনুভব করে, যেখানে তারা সমাজের কাঠামোর মধ্যে নিজেদের সঠিক স্থান খুঁজে পেতে সংগ্রাম করে। এই অস্থিরতা তাদের চিন্তাভাবনা এবং ক্রিয়াকলাপে প্রতিফলিত হয়।

• বিশ্বাস ও বিশ্বাসঘাতকতার খেলা: উপন্যাসের মধ্যে চরিত্রগুলির মধ্যে বিশ্বাস এবং বিশ্বাসঘাতকতার খেলা চলে। তাদের সম্পর্কগুলো শুধুমাত্র সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং নিজেদের মধ্যে আস্থা এবং সমঝোতার ওপরও নির্ভরশীল।

• মানবিক দুর্বলতা এবং শক্তি:তখন কুয়াশা একদিকে চরিত্রগুলির মানবিক দুর্বলতা, অবিশ্বাস এবং দ্বন্দ্বকে দেখায়, অন্যদিকে তাদের শক্তি, সাহস এবং নিজেকে জয় করার প্রয়াসকেও তুলে ধরে। এই দ্বন্দ্বের মধ্যে চরিত্রগুলির মানসিক এবং শারীরিক শক্তি উদ্ভাসিত হয়।

• অস্তিত্বের সংকট: চরিত্রগুলির অস্তিত্বের সংকট তাদের জীবনের বিভিন্ন দিক থেকে উদ্ভূত হয়, যা তাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক জীবনকে প্রভাবিত করে। তারা জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টা করে, নিজেদের পরিচয় এবং পৃথিবীতে তাদের ভূমিকা নির্ধারণের চেষ্টা করে।

• দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি: লেখক সৌমিত্র বিশ্বাসের দৃষ্টিভঙ্গি পাঠককে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের মূল্য বুঝতে সাহায্য করে, যেখানে ব্যক্তি তার আত্মপরিচয়ের দিকে তাকায় এবং জীবনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনা করে।

• পাঠককে আত্মবিশ্লেষণ করতে উদ্বুদ্ধ করা: এই উপন্যাসটি পাঠককে নিজের জীবন, সম্পর্ক এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুনরায় ভাবতে অনুপ্রাণিত করে। এটি তাদের অস্থিরতা এবং সংকটের মধ্যে আশার আলো দেখানোর চেষ্টা করে।

• সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমন্বয়: উপন্যাসটি ব্যক্তিগত জীবনের সংকট এবং সামাজিক অবস্থানের মধ্যে একটি মেলবন্ধন তৈরি করে, যেখানে চরিত্রগুলি তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং বাইরের সমাজের মধ্যে সমন্বয় খুঁজে পায়।

• গভীর মানবিক অনুভূতি:তখন কুয়াশা শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, বরং এটি এক ধরনের মানবিক অনুভূতির মেলবন্ধন, যা চরিত্রগুলির জীবনের নানা দিক নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করে। এটি পাঠকদের অনুভূতি এবং চিন্তা-ভাবনা আরো গভীরভাবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।

এই উপন্যাসটি জীবনের জটিলতা, সম্পর্কের মানসিক এবং সামাজিক স্তর, এবং মানবিক পরিস্থিতির মধ্যে সঠিক সমন্বয় খুঁজে পাওয়ার একটি শক্তিশালী কাহিনী, যা পাঠককে তাদের জীবনের দিক-নির্দেশ এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করে। তখন কুয়াশা সামাজিক কাঠামো, সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত সংকটের মধ্যে একজন মানুষের সংগ্রামের একটি মর্মস্পর্শী বিশ্লেষণ।